Thursday, 30 April 2015

কেওক্রাডং থেকে "সাকাহাফং" বা "মদক তং" বেশী উচু : তার ৭ টি প্রমান ।


১। আর্মির স্হাপিত ফলক আর বিশ্বে স্বীকৃত ইউ এস ম্যাপ : 
 
কেওক্রাডং এর উপর স্হাপিত ফলকে দেখা যায় এটা ৩১৭২ ফুট উচু । 
 
ইউ এস ম্যাপে দেখা যায় মদক তং ৩৪৫৪ ফুট উচু। 

২। রাশিয়ান টপোগ্রফিক ম্যাপ : 
 
রাশিয়ান টপোগ্রফিক ম্যাপে কেওক্রডং ৮৮২ মিটার উচু, আর রাশিয়ান টপোগ্রফিক ম্যাপে মদক তং বা সাকাহাফং ১০৬২ মিটার উচু । 
 

৩। গুগুল ম্যাপ : 
 
গুগুল ম্যাপে কেওক্রাডং এর উচ্চতা ১০০০ মিটার থেকে অনেক কম। ৯৬০ থেকে ৯৮০ মিটারের মাঝে, অন্যদিকে ম্যাপে মদক তং বা সাকাহাফং এর উচ্চতা কমপক্ষে ১০৪০ মিটার । 
 

৫। অসংখ্য অভিযাত্রী দলের নেওয়া জিপিএস রিডিং: 
 
জিপিএস ডিভাইসে কেওক্রাডং এর রিডিং এসেছে ৩২৩০ ফুট । একই ডিভাইসে সাকার রিডিং এসেছে ৩৪১০ ফুট। 
 

৬। গুগুল আর্থ : 
 
গুগুল আর্থ এ কেওক্রাডং ৩১৬৬ ফুটের মত আর সাকাহাফং ৩৪১২ ফুট এর কাছাকাছি। 
 


এছাড়া নাসার এসআরটিএম(SRTM) ডেটায় দেখা যায় কেওক্রাডং সবচেয়ে উচু না মদক তং বা সাকা হাফং -ই সবচেয়ে উচু ।

Wednesday, 22 April 2015

বাংলাদেশের সবচেয়ে বিপদজনক চুড়া 'যোগী' সামিট প্রমাণের ১০টি উপায়।(১ম পর্ব )


 
বাংলাদেশের এ পর্যন্ত অভিযান হয়েছে এমন পাহাড়গুলোর মাঝে সবচেয়ে বিপজ্জনক ও ঝুকিপূর্ণ চুড়া যোগী হাফং। মায়ানমার সীমান্তে অবস্হিত মদক রেঞ্জের আরো উচু উচু চুড়া আছে । দেশের সবচেয়ে উচু চুড়া মদক তং বা সাকাহাফং ও এই এলাকাতেই অবস্হিত । আর সবচেয়ে কঠিন ও কষ্ট সাধ্য জ- ত্লং ( ২য় সর্বোচ্চ) এর খুব কাছেই অবস্হিত । কিন্তু এই যোগী হা ফং বা যোগী পাহাড়টাই আরোহণের দিক থেকে সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ বা বিপজ্জনক । ( উপরে ছবিতে যোগী/ কনদুক দেখা যাচ্ছে লোহ ঝিরি থেকে ) 

যোগী পাহাড়ে ২০১৪-১৫ তে বেশ কিছু অভিযান হয়েছে । চুড়া হিসেবে এর বিশেষ সুনাম থাকায় ট্রেকারদের কাছে বেশ জনপ্রিয় এই যোগী । বাংলাদেশের তরুণ ও সম্ভবনাময়ী পর্বতারোহী সালেহীন আরশাদী বিষয়টি প্রায় ছয়টির মত চুড়া লোকেট করেছেন । অসুবিধা হচ্ছে যোগীতে অনেকগুলো সাব সামিট রয়েছে , যেগুলোতে গিয়ে অনেকেই বুঝতে পারেন না মুল সামিটে গিয়েছেন কিনা । আর গাইড বাবাজীরাও অনেককে গূগল - ভূগল বুঝিয়ে সামিটে না পৌছিয়েই সামিট দাবী করে বসে । 

১। মেইন সামিট থেকে কংদুক বা যোগীর ২য় ও ৩য় সামিট দেখা যাবে, অপেক্ষাকৃত নীচু ও স্পষ্ট । 
মেইন সামিট থেকে পাওয়া ভিউ। 
 
মেইন সামিট থেকে চিন্হিত সাব সামিটগুলো দেখা যায় । 

২। মেইন সামিটের ৫/৬ হাত দূরে ৪/৫ হাত নীচু একটা জায়গা দেখা যাব। কাছাকাছি এরকম একটা জায়গা যোগীর অন্য সামিটগুলোতে নেই । মহান অভিযাত্রী মুগ্ধ এখানেই দাড়িয়েছিল আর মাইনুল তার ছবি উঠিয়েছিল। 
বাংলাট্রেক থেকে পাওয়া মুগ্ধর ছবি 


 

৩। জ-ত্লং আয়ান ক্লা্যাং এর ওয়েষ্ট ফেস অর্ধেকটাই যোগী ম্যাসিফ দিয়ে ঢাকা পরবে । জ -ত্লং এর পশ্চিমের পুরা ঢাল দেখা যাবে না । ২৮০০-২৯০০ ফুটে পুরা ঢালটা সামনে থাকে । ৩১০০ ফুট সামিটে প্রায় পুরাটাই দেখা যায়, কিছুটা ঢাকা থাকে, মেইন সামিটে এমন নয় । 

 
ছবিটি ২৯০০ -৩০০০ ফুট উচু থেকে তোলা । আয়্যান এবং জ-ত্লং এর পশ্চিম পাশ পুরাটাই দেখা যাচ্ছে এখানে। 

 
উপরেরে ছবিতে দেখা যাচ্ছে জ-ত্লং এবংআয়্যান ক্ল্যাং অনেকটাই ঢাকা পরে গেছে যোগী ম্যাসিফের আড়ালে। 

৪। ৩০০ ডিগ্রী একটা খোলা ভিউ পাওয়া যাবে । প্রথম অভিযাত্রী দল ৩৬০ ডিগ্রী ভিউ পাওয়ার কথা জানায় , এখন একটা সাইডে প্রায় ৬০ ডিগ্রীর মত ঢেকে গেছে বাশ আর গাছে। এখান থেকে জ-ত্লং এর ছবি তুললে কোন বাশ/গাছ ফ্রেমে আসবে না । ৩১০০ ফুটের ২য় /৩য় সামিট থেকে ছবি তুললে বাশ/গাছ ফ্রেমে এসে পরবে । 

 
মেইন সামিটের আগে একটা সাব সামিট থেকে পাওয়া ভিউ ।বেশ কিছু বাশ দেখা যাচ্ছে । 

 
মেই সামিট থেকে পাওয়া ভিউ । ছবির ফ্রেমে জ্ত্লং একদম খোলামেলা । কোন ডাল পালা বাশ ঝাড় এসব আসেনি ছবির ফ্রেমে । 

৫। সামিট মাত্র দুই হাত একটা জায়গা ( লম্বা ও চওড়ায় ) পাশাপাশি দুই জন দাড়ালে গায়ে গায়ে লাগা লাগি হয়ে যাবে ! অন্য সামিট গুলো এরকম না ! 

৬। যোগী ম্যাসিফের ইষ্ট ফেস বেশ খানিকটা দেখা যাবে ! আর কোন সাব-সামিটে এটা সম্ভব নয় । 
 

৭। আয়ান ক্ল্যাং এর ও ইষ্ট ফেসের ঢালটা দেখা যাবে । ২৮০০ -৩০০০ ফুট পর্যন্ত আয়ানের শুধু নর্থ রিজটা দেখা যায় । ৩১০০ ফুটে গিয়ে নর্থ রিজ আর ইস্ট ফেস লাগালাগি ভাবে দেখা যায় । কিন্তু ৩২০০ ফুটের বেশী মেইন সামিটে গেলে নর্থের রিজ লাইনটা একদম বরাবর এসে যায় । 
 

৮। আয়ান ক্লাং ও কনদুক এর কানেকটিং রিজটার ইষ্ট ফেস দেখা যাবে । 


Saturday, 18 April 2015

বাংলাদেশের সবচেয়ে বিপদজনক চুড়া 'যোগী' সামিট প্রমাণের ১০টি উপায় (পর্ব : ২ )


 
যোগী আরোহণের সময় ২৮০০-২৯০০ ফুট উচ্চতায় জ-ত্লং আর আয়্যান ক্ল্যাং দেখা যায় এরকম । দূরে ডানে চিম্বুক রেঞ্জের ক্রিসতং । সকাল বেলা পুরা সাংগু - রেমাক্রি অববাহিকা মেঘে ঢাকা ! মেঘের মাঝে উচু পাহাড়ের চুড়াগুলো মাথা বের করে আছে দ্বীপের মত। 
 
আয়্যান ক্ল্যাং বা হলুদ পাহাড় আর বাংলাদেশের ২য় সর্বোচ্চ জ-ত্লং আপনার ডান পাশে দেখা যাবে । আয়্যানের দক্ষিণ রিজ আর জ এর উত্তর রিজ যেখানে মিলে সেখান থেকে আয়্যানেরে উত্থান দেখা যাবে পিরামিডের মত । একই স্হান হতে 'জ-ত্লং' এর উত্থান দ্বিগুনেরও বেশী । আয়ানের পিরামিডের উচ্চতা ৪০% এর মত হবে জ -ত্লং এর তুলনায় ( একই স্হান থেকে জ-ত্লং এর পিরামিড মাপা হলে) 

 
যোগী আরোহণের সময় ২৯০০-৩০০০ ফুট উচ্চতায় জ-ত্লং আর আয়্যান ক্ল্যাং দেখা যায় এরকম । বেশ অনেকটা জুম করে তোলা হয়েছে ছবিটা , পোষ্টের প্রথম ছবিটা জুম করা হয়নি ) লক্ষ করবেন এই ভিউতে 'আয়ান ক্ল্যাং'এর পিরামিডের উচ্চতা ২৫-৩০% এর মত হবে 'জ -ত্লং' এর তুলনায় । ( একই স্হান থেকে জ-ত্লং এর পিরামিড মাপা হলে) 

 

এবার দেখুন যোগীর ২য় বা তৃতীয় সামিট থেকে কেমন দেখা যাবে : 
 

মুল সামিটের দক্ষিণে৩১২০ - ৩১৬০ ফুটের মত উচ্চতা বিশিষ্ট দুটি সামিট আছে উচ্চতার হিসেবে এরা যোগী ম্যাসিফের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় । এখান থেকে আয়ান ক্ল্যাং এর পিরামিড কে আরো ছোট দেখায় জ-ত্লং এর তুলনায় । উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে 'জ-ত্লং' এর ভিউ আশে পাশের সবকিছুকে ডমিনেট করছে, আর আয়ান ছোট হয়ে যাচ্ছে ! 


 


এবার দেখুন মূল সামিট থেকে কেমন ভিউ পাওয়া যাবে : 
 

সামিট থেকে দেখলে আয়ান -কে মনে হবে একদম মিশে গেছে । অল্প যতটুকু চোখে পরবে সেটা জ-ত্লং এর তুলনায় ১০% হতে পারে। মূল কথা দক্ষিন-পশ্চিম দিক থেকে আরোহণের সময় যত উচুতে উঠবেন আয়ান ছোট হতে থাকবে আর সে তুলনায় জ-ত্লং বড় হতে থাকবে। আসলে নিয়মটা এরকম-ই , যত উপরে উঠবেন বড় বড় পাহাড়গুলো আরো বিস্তৃত ও প্রশস্হ দেখায় । আর ছোট ছোটা পাহাড় ও অন্যান্য অবজেক্টগুলো ধীরে ধীরে মিলিয়ে যেতে থাকে , কমপক্ষে ছোট থেকে ছোট হয়ে যায় !
 

Wednesday, 15 April 2015

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চুড়া থেকে দেখা পাহাড়গুলো


 
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চুড়া মদক তং বা সাকাহাফং থেকে দক্ষিণে তাকালে মদল রেঞ্জের উচু চুড়াগুলি চোখে পরে। উপরে ছবিতে দেখা যাচ্ছে জ-ত্লং , যোগী/কংদুক , আয়্যান ক্লাং, সাদরা-তাওবা । 

সোজা পশ্চিমে সরকারী সর্বোচ্চ তাজিংডং এর তিন পিক : সাকা সামিট থেকে ১০০ ফুট নীচে তোলা ছবি। 

 
চিম্বুক রেঞ্জের সর্বোচ্চ চুড়া ক্রিস তং দেখা যায় দূরে । ( দক্ষিন -পশ্চিমে) 

 
দূরে উত্তর পশ্চিমে কেওক্রাডং ও কপিতাল । 

পশ্চিমে তাজিংডংএর পিছনে, একটু বামে চিম্বুক রেঞ্জের ২য় সর্বোচ্চ চুড়া থাইনকিয়াং। ( অনেকটা জুম করা হয়েছে তাই তাজিংডং ফ্রেমে আসেনি) 


দক্ষিণে একটু ডানে সাদরা, ইশ্বরমণি পাড়ার মাথার উপরের একটা চুড়া । 

 
সাকা বা মদকতং সামিটের ১০০ ফুট নীচ থেকে ১৮০ ডিগ্রী ভিউ ।

Tuesday, 14 April 2015

বাংলাদেশের তৃতীয় সর্ব্বোচ্চ চুড়া : দুমলং


০৮ ই এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৩:১

 
দুমলং-এর ভাজে ভাজে মেঘের খেলা ! 

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ চুড়া মদক তং বা সাকাহাফং অভিযানের পর দেশের এডভেঞ্চার প্রেমীদের চোখ পরে দুমলং এর উপর । রেংত্লাং রেঞ্জের সর্বোচ্চ চুড়াটি তখনও দুমলং নামে পরিচিত হয়নি । গুগুল আর্থ - এ এটাকেই দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চুড়া হিসেবে দেখাত । রেংত্লাং এর সর্বোচ্চ চুড়া হিসেবে একে রেংত্লাং নামেই ডাকা হতো । 
 
মেঘের আড়ালে দুমলং 

২০১২ সালে নেচার এডভেঞ্চার ক্লাবের রুবেল- হক প্রথম অভিযাত্রী দল হিসেবে এটা আরোহন করেন। তখন স্হানীয়দের কাছ থেকে জানা যায় রেংত্লাং এর এই চুড়াটা স্হানীয়রা দুমলং নামেই ডাকে। দুমলং মুলত একটি ঝিরি বা ছোট পাহাড়ি নদী , যেটা পাহাড়ের গা বেয়ে কয়েক কিলোমিটার উত্তরে রাইখান নদীটে মিশেছে । এই ধারাটির উৎস হিসেবে চুড়াটাকেও দুমলং বলা হয় । 

 
দুমলং এর তিনটি চুড়া , উত্তরের চুড়া, পশ্চিমের চুড়া আর আসল চুড়া। 

গুগুল আর্থ এর একটা সমস্যা আছে কোন কোন স্হানকে একটু বেশী উচু বা নীচু দেখানোর। মুলত সাটল রেডার ডেটার রিডিং প্রতিটি বিন্দুর উচ্চতা মেপে নেওয়া হয় না, বরং কয়েয়টি পয়েন্ট এর রিডিং নেওয়ার পাশাপাশি মধ্যবর্তী বিন্দুগুলোর জন্য এর একটা গড় নেওয়া হয় । আর বিভ্রাট ঘটে সেখানেই। পর্বতের সর্বোচ্চ বিন্দুর রিডিং না নিয়ে কাছাকাছি দুটি বিন্দুর গড় নিলে মুল উচ্চতা থেকে রিডিং কম দেখাবে। আবার গভীর খাতের কাছাকাছি দুটা পয়েন্ট এর গড় নিলে উচ্চতা বেশী দেখাবে ।এই কম বেশী দেখানোর -ও আবার একটা প্যাটার্ন আছে । কোন খাড়া পাহারের চুড়ার আশে পাশের পয়েন্ট গুলো বেশ নীচু হ, আর ফ্ল্যাট পাহাড়ের চুড়ার আশ পাশটা কম নীচু হয়। তাই খাড়া চুড়াগুলোতে গুগুল আর্থের ভুলের পরিমান বেশী আর ফ্ল্যাট চুড়াগুলোতে কম । 

চুড়া হিসেবে দুমলং অনেকটাই ফ্ল্যাট, ২য় সর্বোচ্চ চুড়া জ-ত্লং এর তুলনায়। কিন্তু জ -ত্লং এর খাড়া ঢাল এর কারণে গুগুল আর্থ - এ এর উচ্ছতা বেশ অনেকটাই কম দেখায়। আর সেই সুযোগে দুমলং হয়ে গেছে গুগুল আর্থ -এ দ্বিতীয় ! 

 
জি পিএস রিডিং - এ ৩৩১৫ ফুট পেয়েছিলাম । ( কেওক্রাডং ৩২৩০ ফুট পেয়েছিলাম) 

যাই হোন দ্বিতীয় মনে করেই এর খোজ খবর আর অভিযানের চেষ্টা চলতে থাকে । অবেশেষে জ_ত্লং কয়েকটা অভিযাত্রী দল মাপার পর-ই নিশ্চিত হওয়া যায় দুমলং ২য় না , বরং ৩য় । 

 
ট্রেকে প্রথম দেখা হয় দুমলং এর সাথে হারমন পাড়ার কাছাকাছি।

Tuesday, 7 April 2015

বাংলাদেশের সবচেয়ে উচু সাত পাহাড়ের সাতকাহন :২য় সর্বোচ্চ চুড়া জ-ত্লং বা মদক মুয়াল



 
অনেকদিন পর্যন্ত মদক মুয়ালকেই কিছু কিছু লোকজন দেশের সবচেয়ে উচু চুড়া মনে করত । তবে নাসার স্যাটেলাইট ডেটা থেকে দেখা যায় এটা দেশের ২য় বা ৩য় চুড়া । কোন কোন স্যাটেলাইট ডেটা অনুসারে রেংত্লাং রেঞ্জের দুমলং ২য় আর জ-ত্লং তৃতীয় । তবে অভিযাত্রী দলগুলো প্রায় সবাই জ ত্লং কেই ২য় পেয়েছে ।

ভ্রমণ বাংলাদেশ ও এডভেঞ্চারবিডির জরিপে উপস্হিত থেকে আমি জত্লং কে ৩৩৩০ ফুট আর দুমলংকে ৩৩২০ ফুট জিপিএস রিডিং -এ পাই। সেহিসেবেও এটি ২য় । 

 
তবে জত্লং এর প্রধান বৈশিষ্ট্য এর ১ম, ২য় বা ৩য় অবস্হান না । এর কঠিন আর দুরূহ আরোহন পথটাই একে অন্যান্য চুড়া থেকে সতন্ত্র করেছে। সব অভিযাত্রীরাই এ কথা বিনা দিধায় বলবে আমাদের দেশে জ-ত্লং আরোহন -ই সবচেয়ে কঠিন ।
 

বান্দর বনের থানচি থানার রেমাক্রি বাজার থেকে ৩ ঘন্টার হাটা পথ দলিয়ান পাড়া । এখানেই বসবাস করেন স্হানীয় মৌজা প্রধান বা হেডম্যান । অনেকে এটাকে দলিয়ান হেডম্যান পাড়াও বলে থাকেন। এর পাশেই মদক রেঞ্জের খাড়া খাড়া কিছু চুড়া । আর দলিয়ানের পাশের সবচেয়ে বড় চুড়াটাই জ-ত্লং। 

২০০৫ সালে জনাব নিতিশ আর কানাডা প্রবাসী ডাক্তার বিজয় এই চুড়ায় প্রথম অভিযান চালিয়েছেন বাংগালী হিসেবে । পাহাড়ীরা এসব চুড়ায় শিকারের কাজে প্রায়ই যাওয়া আসা করে থাকে । চুড়ায় জুম চাষ না হলেও এখানের ঘন জংগলে অসংখ্য বন্য প্রাণী শিকার হয়ে থাকে প্রতি নিয়ত -ই। অজগর, বুনো শুকর, ভাল্লুক , বন মোরগ, বানর , বন গয়াল সহ হরেক প্রজাতির প্রাণী ২০১৪ সালেও শিকার হয়েছে এখানে । 

প্রায় ৬০০ ফুট উচ্চতায় দলিয়ান পাড়া থেকে ৩০০ ফুট নেমে লোহ ঝিরি । আর লোহ ঝিরি থেকে একদম ৩০০০ ফুট আরোহন করে ৩৩০০ ফুট উচুতে গিয়ে তবেই দেখা মিলবে জ-ত্লং চুড়ার । অনেক অভোযাত্রী দলই চুড়ায় পৌছুতে গিয়েই শেষ করে ফেলেন সারা দিন। ফল হয় সারা রাত চুড়াতে কাটিয়ে দিতে হয় - বন জংগলে !